লাহোর প্রস্তাবের মূল আলোচ্য বিষয়

১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের মূল আলোচ্য বিষয় | লাহোরে মুসলিম লীগের ২৭তম বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ তাঁর সভাপতির বক্তৃতায় মুসলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন। এরপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এ কে ফজলুল হক উপস্থাপিত এ প্রস্তাবটি ঐতিহাসিক ‘লাহোর প্রস্তাব’ নামে পরিচিত। এই প্রস্তাবের মূল বক্তব্য ছিল নিম্নরূপ :

০১। “নিখিল ভারত মুসলিম লীগ দৃঢ়তার সাথে পুনঃঘোষণা করছে যে, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে যে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা রয়েছে তা এ দেশের উদ্ভূত অবস্থার প্রেক্ষিতে অসঙ্গত ও অকার্যকর বিধায় তা ভারতীয় মুসলমানদের জন্য অগ্রহণযোগ্য।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

০২। সমস্ত সাংবিধানিক পরিকল্পনা নতুনভাবে বিবেচনা না করা হলে মুসলিম ভারত অসন্তুষ্ট হবে এবং মুসলমানদের অনুমোদন ও সম্মতি ব্যতিরেকে সংবিধান রচিত হলে কোনো সংশোধিত পরিকল্পনাও তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।”

০৩। “নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সুচিন্তিত অভিমত এরূপ যে, ভারতে কোনো শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনা কার্যকর হবে না বা মুসলমানদের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না যদি তা নিম্নবর্ণিত মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে রচিত না হয় :

(ক) ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী সংলগ্ন বা সন্নিহিত স্থানসমূহকে ‘অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে,

(খ) প্রয়োজন অনুযায়ী সীমানা পরিবর্তন করে এমনভাবে গঠন করতে হবে যেখানে ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান এলাকাগুলো ‘স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ’ গঠন করতে পারে,

(গ) ‘স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের’ সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাষ্ট্র বা প্রদেশসমূহ হবে স্বায়ত্তশাসিত ও সার্বভৌম।”

০৪। “এ সমস্ত অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য অধিকার ও স্বার্থরক্ষার জন্য তাদের সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে সংবিধানে কার্যকর ও বাধ্যতামূলক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতবর্ষের মুসলমান জনগণ যেখানে সংখ্যালঘু সেখানে তাদের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য অধিকার এবং স্বার্থরক্ষার জন্য পরামর্শ সাপেক্ষে সংবিধানে পর্যাপ্ত কার্যকর ও বাধ্যতামূলক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতে হবে।”

১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের মূল আলোচ্য বিষয় :

১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের মূল আলোচ্য বিষয় | উল্লিখিত প্রস্তাবটি অবলোকন করলে প্রতিভাত হয় যে, চল্লিশের লাহোর প্রস্তাবে পাকিস্তান শব্দটি কোথাও ছিল না, পাকিস্তানের যে ধারণা বিলেতে একজন মুসলমান ছাত্র প্রথম প্রচার করেন তাতে বাংলার কথা ভাবাই হয় নি, জিন্নাহ সে-প্রস্তাবকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, লাহোর প্রস্তাবে একটি নয়, একাধিক মুসলমান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল। অর্থাৎ জিন্নাহ জানতেন না তিনি কোনো আয়তনের রাষ্ট্র চাচ্ছেন । মূলতঃ এ সকল অসঙ্গতি ও অবহেলা নিয়েই ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের পথচলা এবং পরিণতি।

আরো পড়ুুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!