সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যসমূহ

সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা হলো পাবলিক প্রশাসনের একটি উপ-শৃঙ্খলা, যা সরকারি সংস্থাগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিশ্বায়নের এই যুগে যেকোনো দেশের উন্নয়ন সাধনের জন্য সরকারি খাত ব্যবস্থাপনাকে প্রধান নিয়ামক হিসেবে ধরা হয়েছে, যেখানে সরকারি খাতের সকল কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে।

পাবলিক সেক্টরের সরকারি খাতগুলোকে সমন্বয় সাধানের কাজ করে সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা। অন্যদিকে, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা সরকারি খাতের বিভিন্ন দিক, যেমন— উৎপাদনশীলতা, মানব ও আর্থিক সহায়তা এবং সামগ্রিক নীতি কাঠামো সরবরাহ করে। সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারি খাতের সামষ্টিক কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করা সম্ভব হয়।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

অর্থাৎ, সামগ্রিক সরকারি পরিষেবাগুলো এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্য : সাধারণত, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা সরকারি খাতের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে। তাই এইক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা এবং সেবার মান উভয়ই বৃদ্ধি পায়। সরকারি খাতের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবার ক্ষেত্রে সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে।

নিম্নে সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো :

০১। উপ-শৃঙ্খলার কাজ : সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো উপ-শৃঙ্খলার কাজ। কারণ, এই ব্যববস্থাপনা সরকারি খাতগুলোর উপ-শৃঙ্খলার কাজ করে। উপ-শৃঙ্খলার উপস্থিতির কারণে কার্যক্রমগুলো এবং কাঠামোগুলো সুষমভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

২। পরিচালনা কাঠামোর বাস্তবায়ন : সরকারি খাতের আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পরিচালনা কাঠামোর বাস্তবায়ন। কারণ, সরকারি খাতের বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা এবং প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমগুলো সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই কাঠামো পরিচালিত হয়। তাই এই খাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই পরিচালনা কাঠামোর কাজগুলো সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

৩। Integrated Character : অর্থনীতিবিদগণ এই Integrated Character কে সরকারি খাত ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এটি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিকে investigate করে এবং লোক প্রশাসনের সাথে সমন্বয়সাধন করে। ফলে কাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাতে।

০৪। Political Character : সরকারি খাত ব্যবস্থাপনাগুলো অবশ্যই political factor-গুলোর মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। আর সেই কারণে এই সরকারি খাত ব্যবস্থাপনাতে যেন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ খুব বেশি না হতে পারে, সেজন্য সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে।

০৫। Diversity : সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার অন্যতম আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো Diversity। কারণ, এইক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনাগুলো আঞ্চলিক, স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় বিভিন্ন Diversity-র মাধ্যমে কার্যক্রমগুলো সম্পাদিত হয়। আর সেই কারণে প্রশাসনিক ধারা অনুযায়ী এই খাত ব্যবস্থাপনার সকল কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়।

০৬। Complexity : Complexity সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কারণ, অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে, “The public management has a complex character because it gathers specific elements of management in different areas of public sector.”। তাই সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা জটিল হিসেবে বিবেচিত।

০৭। Synthetic Character : অর্থনীতিবিদগণ সরকারি খাত ব্যবস্থাপনাকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করতে যেয়ে Synthetic-কে এর বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরেছেন। কারণ, এই সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা অবশ্যই law, socialogy, economy এবং statistics-এর সাথে সম্পর্কিত।

০৮। সম্মলিত সিদ্ধান্তের খাপ খাওয়ানো : সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সম্মিলিত সিদ্ধান্তের সাথে খাপ খাওয়ানো। কারণ, The adoption of collective decisions কে এই খাত ব্যবস্থাপনার মূল হিসেবে ধরা হয়, যার মাধ্যমে শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

০৯। মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি : সাধারণত, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনাতে মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা পরিচালনার ক্ষেত্রে সামগ্রিক নীতিকাঠামো সরবরাহ করতে বাধ্য করা হয়েছে, তাই সরকারি খাতগুলোতে এটি সংস্থাগুলোর পরিচালক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। সেই কারণে মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত।

সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যসমূহ | পরিশেষে বলা যায় যে, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। কারণ, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের উপ-শৃঙ্খলা হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে পরিষেবাগুলো সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পরিচালিত করা সম্ভব হয়।

অন্যদিকে, এই পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্টের কাঠামোর কারণে কিছুটা হলেও সমষ্টিগত এই খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চলে আসে। তাই সরকারি খাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন policy গঠন এবং এর সঠিক প্রতিফলনের মাধ্যমে পরিষেবাকে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। সেই হিসেবে যেকোনো দেশের টেকসই উন্নয়ন সাধনের জন্য সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!