রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা হচ্ছে সেই ব্যবস্থাপনার অংশ যা সরকার বা রাষ্ট্রের বৈধ কর্তৃত্ব দ্বারা সম্পন্ন হয়। তাই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বা খাতকে অনেকেই সরকারি খাত বা প্রতিষ্ঠান বলে থাকে। নাগরিক সমাজের উন্নত ও নিরাপদ জীবনযাপন বহুলাংশে সুষ্ঠু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান/খাত ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রীয় খাত হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জরুরি সেবা, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা (Public Sector Management):
সাধারণত, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা হলো সরকারি ব্যবস্থাপনা। তাই সরকার কর্তৃক সমাজের বৃহত্তর মানুষের জন্য যে কর্ম সম্পাদনা নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয় তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হলো যতবেশি সম্ভব মানুষের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বৃহত্তর মানুষের কল্যাণ সাধন। একটি রাষ্ট্রের জনগণকে শিক্ষিত করে তোলার পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানের সাথে জড়িত সেই সকল ব্যবস্থাপনা যা সরকার কর্তৃক সম্পদান করা হয় তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনা যেখানে ব্যক্তিগত বা কোন বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থে পরিচালিত হয় আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা সেখানে সকলের জন্য নিবেদিত। অর্থাৎ একটি দেশের সরকার যে কৌশল বা নীতি কর্মপদ্ধতি দ্বারা জনগণের সার্বিক কল্যাণ সাধন করতে চায় তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা।
রাষ্ট্রীয় খাত ব্যৱস্থাপনা হলো দেশের সমগ্র জনগণের কল্যাণকে ঘিরে সরকারি কর্মকৌশল বা ব্যবস্থাপনা। রাষ্ট্রের বৈধ কর্তৃত্বের অধিকারী হিসেবে সরকার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার আধার। তাই একটি দেশের সরকার কর্তৃক পরিচালিত ব্যবস্থপনা কৌশলই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য নিবেদিত। পরিশেষে আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্রীয় খাত ব্যবস্থাপনা হলো রাষ্ট্রের সেই সকল ব্যবস্থাপনার সমষ্টি যা কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয় বরং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য পরিচালিত হয়। সরকার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার অন্যতম অনুঘটক বা Actor হিসেবে কাজ করে। সরকারি নীতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন রাষ্ট্রীয় খাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পূর্বশর্ত।