রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করার উপায়সমূহ

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করার উপায়সমূহ | রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার কর্মক্ষেত্র ব্যাপক ও জটিল হওয়ায় এর সমস্যাও বহুমুখী। জনগণের অংশগ্রহণের অভাব, প্রশাসনের রাজনৈতিকীকরণ ও স্বার্থের একত্রীকরণ সমস্যার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা লক্ষ্য অর্জনে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের সার্বিক কল্যাণ সাধনের চেষ্টা করা হয়।

সেজন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সমস্যাসমূহ দূর করা একান্ত জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ, জনগণকে অংশগ্রহণ ও জনস্বার্থের একত্রীকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর করে তোলা সম্ভব। নিম্নে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা নিরসনের উপায়সমূহ আলোচনা করা হলো:

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করার উপায়সমূহ

০১। রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা নিরসনের জন্য রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবস্থাকে অবশ্যই রাজনৈতিক নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। রাজনৈতিক নিরপেক্ষ প্রশাসনের মাধ্যমেই জনগণের সার্বিক স্বার্থরক্ষার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে শতভাগ কার্যকর করে তোলা সম্ভব।

০২। অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ : রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে যখন জনগণ ও সুশীল সমাজ অংশগ্রহণ করবে তখনই তা কার্যকর ব্যবস্থাপনায় রূপ নিবে। নাগরিক ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণের ফলে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বৃদ্ধি পাবে যা সুশাসনের পথকে সুগম করবে।

০৩। স্বার্থের একত্রীকরণ : রাষ্ট্রের সকল জনগোষ্ঠীকে সাধারণ স্বার্থের ব্যাপারে একত্রীকরণ করা একান্ত জরুরি। সেজন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ জনস্বার্থ বিষয়টিকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

০৪। প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা/অন্তরায় দূর করতে হলে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি যতবেশি বাস্তবায়িত হবে জনগণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ততবেশি আস্থাশীল হবে।

০৫। প্রশাসনের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় বিরাজমান সমস্যাসমূহ দূর করতে হলে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করতে হবে। দক্ষতা ও স্বচ্ছতা যতবেশি হবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সফলতার হার ততবেশি হবে।

০৬। বৈধ কর্তৃত্বের নেতৃত্বদান : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করতে হলে প্রশাসন ব্যবস্থায় অবশ্যই বৈধ কর্তৃত্বের নেতৃত্ব থাকতে হবে। তাহলে জনগণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাশীল হবে এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী হবে।

০৭। দূরদর্শী নেতৃত্ব : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে সফলভাবে বাস্তবায়িত করে জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রয়োজন। তাহলে প্রশাসনের কাজের সফলতা বৃদ্ধি পাবে এবং দুর্নীতি রোধ হবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করার উপায়সমূহ

০৮। দুর্নীতি রোধ : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক দুর্নীতি বিরাজ করে বিধায় এর কার্যকারিতা খুবই কম। অনেক মহৎ ব্যবস্থাপনাও দুর্নীতির কারণে অচল হবে পড়ে। সেজন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে দুর্নীতি রোধ করতে হবে।

০৯। সজাগ গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের অন্তর্ভুক্তকরণ : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে সফল করতে হলে সজাগ গণমাধমের উপস্থিতি এবং নাগরিক সমাজ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।

১০। সুশাসন নিশ্চিতকরণ : বর্তমানে সুশাসনকে সরকারের কার্যকারিতার মাপকাঠি ধরা হয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাই সকল প্রশাসনিক কাজে সুশাসনের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

১১। যোগাযোগ বৃদ্ধি : সরকারের রাষ্ট্রীয় সকল পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। যোগাযোগ নেটওয়ার্ক যতবেশি
হবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাও ততবেশি স্বচ্ছ ও সফল হবে। ১২. সমন্বয়সাধন : সমন্বয়হীন কোন কাজেই সফলতা আশা করা যায় না। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সকল ক্ষেত্রে সমন্বয়সাধন করতে হবে। উচ্চ প্রশাসনের সাথে মাঠ প্রশাসনের সমন্বয় ব্যতীত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সফলতা অর্জন সম্ভব নয়।

১৩। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ : রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে সমস্যাযুক্ত করতে হলে সরকারি- বেসরকারি অংশীদারি নিশ্চিত করতে হবে। পরিশেষে বলা যায়, সরকারের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের তৎপরতা, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব, বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়সাধন ইত্যাদির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে ঠিক পথে পরিচালনা সম্ভব। এককথায় সুশাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনাকে সমস্যামুক্ত রাখা সম্ভব।

আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!