রোজা রাখার উপকারিতা

রোজা রাখার উপকারিতা

অনেকের ধারণা থাকতে পারে রোজা রাখলে স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু আধুনিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞান এটাকে সম্পূর্ণরুপে ভুল প্রমাণিত করেছে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসুস্থ্য রোগিদেরও রোযা দেওয়ার স্বাস্থ্যগত কিছু উপকারিতার প্রমাণ মিলেছে। তাইতো ইসলাম ধর্মে অনেক আগে থেকেই প্রতি বছরে একটি মাস রোযা রাখা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। রোজা রাখার কতকগুলো স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে। নিম্নে তা দেওয়া হলো:


রোজা রাখার স্বাস্থ্যগত কিছু উপকারিতা:

০১। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে যত মানুষ অপুষ্টিতে ভুগে মারা যায় তার থেকেও অনেক বেশি মানুষ অতিপুষ্টির কারণে মারা যায়। যাদের ওজন পরিমাণের তুলনায় অনেক বেশি রোজা রাখলে খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের কারণে তাদের অতিরিক্ত চর্বি ধ্বংস হয়ে ওজন কিছুটা কমে যায়।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

০২। দীর্ঘ একমাস রোজা রাখার ফলে শরীরের অঙ্গপতঙ্গের মাঝে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। ফলে শরীর অধিক কর্মক্ষম হয়। লিভার শক্তিশালি হয়ে উঠে এবং পরিপাকতন্ত্রে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে সঞ্চিত বিষাক্ত পদার্থগুলো দূর হয়ে যায়।


০৩। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং হাঁপানি রোগীদের জন্য রোজা বিশেষ উপকারী। রোযা রাখলে রক্তে ফ্যাটের মাত্রা কমে যায়, ফলে হৃদরোগের ঝুকি কমে যায়। রোযা রাখলে স্ট্রেস হরমোন কম নিঃসরণ হয়, ফলে বিপাকক্রিয়া ও শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেককাংশেই বেড়ে যায়। রোযা রাখার ফলে মস্তিষ্কের সেরিবেলাম ও লিমরিক সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ে বিধায় মনের অশান্তি ও দুশ্চিন্তা দূর হয়, কর্মোদ্দীপনাও বাড়ে, যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য মঙ্গলজনক। এছাড়াও অধিকাংশ হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রেই রোজা বিশেষ উপকারী ভুমিকা পালন করে।।



০৪। ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য রোজা অনেক উপকারি হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া যেন না হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যারা দুই বেলার অধিক ইনসুলিন গ্রহণ করে থাকেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোযা রাখতে হবে। 


০৫। এটি যেনে অবাক হবেন যে, রোজা গ্যাস্ট্রিক বা ডিওডেনাল আলসার বৃদ্ধি করে না। এটা আমাদের কথা না, চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের অভিমত। রোযা যেহেতু মানসিক প্রশান্তি নিয়ে আসে তাই এসিড নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে। আর এজন্যই রোযায় গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগীরা ভাল থাকেন। তবে ডিওডেনাল আলসারের রোগীদের ক্ষেত্রে কখনও কখনও রোজায় ব্যথা বাড়তে পারে। তাই অবিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তাদেরকে রোযা রাখতে হবে।


অন্যান্য ক্ষেত্রে রোজা দেওয়ার উপকারিতা ও সতর্কতা:

০৬। যারা ত্বক চর্চার ব্যস্ত আছেন তারা হয়তোবা জানেন না রোজা রাখলে ত্বক পরিষ্কার ও সুন্দর হয়। রোযা শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেশি পরিমাণে বের করে ফেলার কারণে ত্বক পরিষ্কার হয়। এছাড়াও লিভার ও কিডনির কাজ আরো ভালো হওয়ায় ত্বকে দাগ, ব্রন নির্মূল হতে সাহায্য করে।।



০৭। জেনে রাখা ভালো, ইসলাম ধর্মে ১৪ বছরের আগে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়। অনেক পরিবার আছে যারা বাচ্চাদেরকে রোযা রাখার জন্য উৎসাহিত করে। কিন্তু এটা মোটেও ঠিক নয়। রোযা রাখলে শিশুরা স্কুলে ক্লান্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যকোনো সমস্যা হতে পারে। তাই শিশুদের সারাদিন রোযা না রেখে অর্ধেক দিন অথবা তার কমবেশি সময় ধরে রোজা দেওয়ার অভ্যার করানো যেতে পারে।


০৮। সবশেষে একটা কথা না বললেই নয়, রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস। কাজেই রোযা থাকা অবস্থায় মুসলমানগণ ধুমপানসহ অন্যান্য খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকেন। এমনকি ধুমপানে অভ্যস্ত অথবা নেশাগ্রস্থ মুসলীমদের জন্য ধুমপানসহ অন্যান্য নেশা ত্যাগ করার উপযুক্ত সময় হলো রমজান মাস। তাই যারা ধুমপান বা অন্যান্য নেশা করেন রমজান মাস থেকে এসব নেশাপানি ত্যাগ করেন ভাই। কারণ- নেশার ভয়াবহতা আসলে বলে বোঝানোর মতো না।


লিখেছেন: Md. Alamin Islam


আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!