এন্টিবায়োটিক

এন্টিবায়োটিক যখন মৃত্যুর কারণ

এন্টিবায়োটিক | শিরোনাম পড়ে হয়তো  সামান্য অবাকই হলেন। অসুস্থ হলে যে ঔষধ আমাদের সুস্থ করে তোলে তা আবার মৃত্যুর কারণ হবে কিভাবে? হ্যা, জীবন রক্ষাকারী এই পথ্যকে আমরা দিনে দিনে আমাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে আবিষ্কার করছি। শুধু আপনার আমার না সমগ্র মানবজাতির বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হয়ে উঠলেও অবাক হবার কিছু থাকবেনা। এবার আসুন তাহলে মূলকথায় আসি।


এন্টিবায়োটিক ক্ষতিকর হয়ে ওঠার কারণ:

এন্টিবায়োটিক হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী পদার্থ। শরীরে অনুজীবের প্রবেশের মাধ্যমে যখন আমরা সাধারণ ঔষধ এ সুস্থ না হই তখন ডাক্তার আমাদের Antibiotic দিয়ে থাকেন। এই এন্টিবায়োটিক অনুজীবকে ধ্বংসের মাধ্যমে আমাদের সুস্থ করে তোলে। কিন্তু একবার যদি এই এন্টিবায়োটিক ঐ অনুজীবকে ধরাশায়ী করতে ব্যার্থ হয় তবে ঐ অনুজীব ই আমাদের মৃত্যু ঘটাবে হোক তা সামান্য ক্ষত। এন্টিবায়োটিকের এই ব্যার্থতা আমাদের মাধ্যমেই সৃষ্টি হচ্ছে। অনিয়মিত আর অনিয়ন্ত্রিত সেবনে কার্যকারিতা হারাচ্ছে এন্টিবায়োটিক। সামান্য জ্বর বা কাশিতে আমরা ফার্মেসীতে গিয়ে দুটো এরিথ্রোমাইসিন কিনে খাচ্ছি। বা  ডাক্তার আপনাকে টানা ৭ দিন এন্টিবায়োটিক খাবার নির্দেশনা দিলেও একটু সুস্থতা অনুভব করে ৩-৪ দিন পর কোর্স শেষ না করেই বাদ দিলেন। এই বাদ দেওয়াই আমাদের কাল হয়ে দাড়াচ্ছে বা দাঁড়াবে একদিন। ৩ দিন সেবনে জীবাণু হয়তো কিছুটা দূর্বল হয়ে পড়ায় আপনি সাময়িক সুস্থতা অনুভব  করে আর খেলেন না, কিন্তু জীবানু ঠিক সেই সুযোগটা ভালোভাবেই নিলো এবং শক্তি সঞ্চয় করে আরো শক্তিশালী আর অপ্রতিরোধ্য ভাবে আপনাকে আক্রমণ করলো। তখন আপনার ওই এন্টিবায়োটিকের আর ক্ষমতা থাকবেনা ওই জীবানু ধ্বংসের। ফলস্বরূপ আপনি হয়ে যাবেন Antibiotic রেসিস্ট্যান্ট। এবং ওই সামান্য জ্বরে আপনি ধূকে ধূকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবেন। এত ডাক্তার এত ঔষধ কিন্তু কিছুই করার থাকবেনা। আপনার থেকে ছড়ানো জীবানু অন্যদের মাঝে গেলে তাও রেজিস্ট্যান্ট হিসেবেই যাবে। ফলে তাদেরও আর ওই এন্টিবায়োটিকে কাজ হবেনা। এভাবে চিন্তা করুন মানবজাতির বিলুপ্তির অন্যতম  কারণ আমাদের এই অনিয়মিত আর অনিয়ন্ত্রিত এন্টিবায়োটিক সেবনের ফলে হবে কি’না? একটি এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হচ্ছে সহজেই কিন্তু তার বদলে কোন শক্তিশালী Antibiotic আবিস্কৃত হচ্ছেনা বহুবছর।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

অন্যান্যা ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার:

অনেকেই অজ্ঞতার কারণে ফার্মের মুরগির খাবারে এবং পুকুরে মাছ চাষে অনিয়ন্ত্রিত এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করে থাকেন। তাদের ধারনা থাকে যে এন্টিবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। কিন্তু Antibiotic কখনোই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে না, তা কেবলই রোগের পর তার কার্যকারিতা দেখাতে সক্ষম। এভাবে প্রতিনিয়ত খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে এন্টিবায়োটিক শোষিত হবার ফলেও আমরা এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হতে পারি। ফলশ্রুতিতে রোগ সারাতে আমাদের জন্য কোন এন্টিবায়োটিক আর কাজে আসবে না। তাই এসব ব্যাপারে সতর্ক হওয়া অত্যাবশ্যক।


লিখেছেন: মেসবাউল হক
ফেসবুক: M Mesbaul Haque


আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!