ক্রমিক | সূচিপত্র |
০১। | একুশ শতক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি |
০২। | এই অনুচ্ছেদের MCQs |
০৩। | সম্পূর্ণ সূচিপত্র (ICT/SSC) |
একুশ শতক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ
বিগত শতাব্দীতে সম্পদের যে ধারণা ছিল, একুশ শতকে এসে সেটি পুরোপুরি পাল্টে গেছে। পৃথিবীর সবাই মেনে নিয়েছে যে, একুশ শতকের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। যার অর্থ কৃষি, খনিজসম্পদ কিংবা শক্তির উৎস নয়, শিল্প কিংবা বাণিজ্যও নয়- এখন পৃথিবীর সম্পদ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তার কারণ শুধু মানুষই জ্ঞান অন্বেষণ করতে পারে, ধারণ করতে পারে এবং ব্যবহার করতে পারে।
পৃথিবীর সম্পদের এই নতুন ধারণাটি সারা পৃথিবীতেই মানুষের চিন্তাভাবনার জগৎ পাল্টে দিয়েছে। পৃথিবীর মানুষ এখন একুশ শতকের মুখোমুখি হওয়ার জন্যে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আমরা সবাই অনুভব করতে পারছি একুশ শতকের পৃথিবীটা আসলে জ্ঞানভিত্তিক একটা অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে শুরু করছে।
একুশ শতকে এসে আমরা আরও দুটি বিষয় শুরু করেছি- যার একটি হচ্ছে Globalization, অন্যটি হচ্ছে Internationalization। এই দুটি বিষয় ত্বরান্বিত হওয়ার পেছনের কারণটি হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। যেকোনো দেশের ভৌগোলিক সীমানা বিশ্বায়নের কারণে নিজের দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্যাপারটি বোঝার জন্যে আমরা আমাদের বাংলাদেশের উদাহরণটিই নিতে পারি। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে- তাঁরা যে যেখানে আছে সেই অংশটুকুই বাংলাদেশ। এক অর্থে বাংলাদেশের সীমানা ছড়িয়ে গেছে! আবার বাংলাদেশের অধিবাসী হয়েও তারা পৃথিবীর অন্য দেশের নাগরিক হয়ে বেঁচে আছে, আন্তর্জাতিকতা এখন এই নতুন পৃথিবীর অলিখিত নিয়ম।
আমরা জানি, পৃথিবীর মানুষকে এক সময় বেঁচে থাকার জন্যে পুরোপুরি প্রকৃতির অনুকম্পার ওপর নির্ভর করতে হতো। মানুষ বিভিন্ন যন্ত্র আবিষ্কার করে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনেছে। অষ্টাদশ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের পর মানুষ যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে পৃথিবীর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
পৃথিবীর যে সকল জাতি শিল্প বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল, এক সময় তারাই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। একুশ শতকে যখন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির সূচনা হয়েছে, তখন আবার সেই একই ব্যাপার ঘটছে। যারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করার বিপ্লবে অংশ নেবে তারাই পৃথিবীর চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।
এই নতুন বিপ্লবে অংশ নিতে হলে বিশেষ এক ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে সেটি আমরা অনুভব করতে পারি। যদি আমরা বেঁচে থাকার সুনির্দিষ্ট দক্ষতাগুলো দেখতে চাই তাহলে সেগুলো হবে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব, যোগাযোগ দক্ষতা, সুনাগরিকত্ব, সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতা, বিশ্লেষণী চিন্তা (critical thinking), সৃজনশীলতা এবং তার সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা।
সত্যি কথা বলতে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা (skill) হিসেবে খুব দ্রুত স্থান করে নিচ্ছে। একুশ শতকে টিকে থাকতে হলে সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। এই প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা থাকলেই একজন এটি ব্যবহার করে তার বিশাল বৈচিত্র্যের জগতে প্রবেশ করতে পারে।
একজন শিক্ষার্থী যতক্ষণ পর্যন্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত না হবে- ততক্ষণ পর্যন্ত সে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, সংযোজন, মূল্যায়ন করে নতুন তথ্য সৃষ্টি করতে পারবে না। এই দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে সে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজে স্থান করে নিতে পারবে না।
একুশ শতকের জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও অর্থনীতি সম্পর্কিত ১০টি এমসিকিউঃ
ℹ️ এই ওয়েবসাইট/অ্যাপের MCQ সিস্টেমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন ১: একুশ শতকে সম্পদের নতুন সংজ্ঞা কী?
ক) কৃষি
খ) খনিজসম্পদ
গ) শক্তির উৎস
ঘ) জ্ঞান
✅ উত্তর: ঘ) জ্ঞান
প্রশ্ন ২: মানুষের কী বিশেষ ক্ষমতা একুশ শতকের অর্থনীতিকে জ্ঞানভিত্তিক করে তুলেছে?
ক) যন্ত্র তৈরি করা
খ) শক্তির ব্যবহার
গ) জ্ঞান অন্বেষণ, ধারণ ও ব্যবহার করা
ঘ) ব্যবসা ও বাণিজ্য পরিচালনা
✅ উত্তর: গ) জ্ঞান অন্বেষণ, ধারণ ও ব্যবহার করা
প্রশ্ন ৩: বিশ্বায়ন (Globalization) এবং আন্তর্জাতিকতা (Internationalization) কোন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ত্বরান্বিত হয়েছে?
ক) কৃষি ও খনিজসম্পদ
খ) শক্তির উৎস ও বাণিজ্য
গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
ঘ) যন্ত্র ও শিল্প বিপ্লব
✅ উত্তর: গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
প্রশ্ন ৪: বাংলাদেশের সীমান্ত সম্প্রসারিত হয়েছে বলা হয় কেন?
ক) দেশের ভৌগোলিক এলাকা বেড়েছে
খ) বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে
গ) বাংলাদেশের অর্থনীতি শিল্প বিপ্লবে অংশ নিয়েছে
ঘ) দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে
✅ উত্তর: খ) বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে
প্রশ্ন ৫: শিল্প বিপ্লবের পর অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হয়েছে?
ক) খনিজসম্পদের ওপর নির্ভর করে
খ) যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে
গ) কেবল কৃষিকাজের মাধ্যমে
ঘ) শক্তির উৎস বৃদ্ধির মাধ্যমে
✅ উত্তর: খ) যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে
প্রশ্ন ৬: জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির বিপ্লবে কোন জাতিগুলো বিশ্বনেতৃত্বের ভূমিকা পালন করবে?
ক) যারা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তুলবে
খ) যারা শিল্প বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল
গ) যারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করবে
ঘ) যারা কৃষিকাজে দক্ষ হবে
✅ উত্তর: গ) যারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করবে
প্রশ্ন ৭: একুশ শতকে বেঁচে থাকার জন্য কোন দক্ষতাগুলো সবচেয়ে জরুরি?
ক) কৃষি ও খনিজসম্পদ ব্যবস্থাপনা
খ) শক্তির উৎস ও শিল্প উৎপাদন
গ) বিশ্লেষণী চিন্তা, সৃজনশীলতা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দক্ষতা
ঘ) কেবল ভাষা ও সাহিত্য
✅ উত্তর: গ) বিশ্লেষণী চিন্তা, সৃজনশীলতা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দক্ষতা
প্রশ্ন ৮: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ক) এটি শিল্প বিপ্লবের প্রধান চালিকা শক্তি
খ) এটি শক্তির নতুন উৎস তৈরি করতে সহায়তা করে
গ) এটি বিশাল তথ্যভান্ডারে প্রবেশের সুযোগ দেয়
ঘ) এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয়
✅ উত্তর: গ) এটি বিশাল তথ্যভান্ডারে প্রবেশের সুযোগ দেয়
প্রশ্ন ৯: শিক্ষার্থী কবে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, সংযোজন ও মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে?
ক) যখন সে যন্ত্রপাতি পরিচালনায় দক্ষ হবে
খ) যখন সে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত হবে
গ) যখন সে কেবল বই পড়বে
ঘ) যখন সে কৃষিকাজ শিখবে
✅ উত্তর: খ) যখন সে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত হবে
প্রশ্ন ১০: একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী?
ক) প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা
খ) কেবল সৃজনশীল চিন্তাভাবনা
গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দক্ষতা
ঘ) শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থা
✅ উত্তর: গ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দক্ষতা
বিঃ দ্রঃ এই কনটেন্টটিতে কোনো তথ্য বিভ্রান্তি পরিলক্ষিত হলে উপযুক্ত রেফারেন্সসহ রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ।