ওয়ার্ডপ্রেস | WordPress

ওয়ার্ডপ্রেস কি এবং কেন?

ওয়ার্ডপ্রেস হলো পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS). এটি একটি ওপেন সোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার। সাড়া বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ ওয়েবসাইট WordPress দিয়ে তৈরি করা এবং এটি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ওয়ার্ডপ্রেস মূলত php এবং mySQL দিয়ে তৈরি করা। কোনো রকম প্রোগ্রামিং জ্ঞান ছাড়াই WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট চালানো যায়। ২০০৩ সালের ২৭শে মে ম্যাট মুলেনওয়েগ এটি প্রাথমিকভাবে প্রকাশ করেন, তাই তাকে ওয়ার্ডপ্রেসের জনক বলা হয়ে থাকে। প্রথমদিকে ওয়ার্ডপ্রেস শুধুমাত্র ব্লগিং সফটওয়্যার হিসেবে বেশ পরিচিত লাভ করলেও বর্তমানে ওয়র্ডপ্রেস দিয়ে প্রায় সবরকমের কাজ করা যায়।


কেন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করবেন?

ধরুন আপনার একটি ওয়েসাইট দরকার কিন্তু আপনি ওয়েবসাইট বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। এমন অবস্থায় আপনি ওয়েবসাইট ডেভলপার দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপ অথবা কাস্টমাইজ করে নিলেন। পরবর্তীতে আপনার সাইটের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস অপারেটর রাখতে না চাইলে আপনাকে নিজেই সাইটটি অপারেট করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার কোডিং দক্ষতা ছাড়াই আপনি আপনার সাইটটি চালাতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার কিছু সেল্ফ স্টাডি করার প্রয়োজন হতে পারে। সব কথার মূল কথা হলো WordPress সাইট চালানো অনেক সহজ, চাইলে যেকেউ এটা অপারেট করতে পারে। তাই এর জনপ্রিয়তাও দিন দিন যেমন বেড়ে চলছে তেমনি প্রতিনিয়ত এটার ফাংশনালিটিও বেড়েই চলছে। আজকাল ব্লগিং থেকে শুরু করে ই-কমার্স সাইট, সংবাদপত্র, ই-লার্নিং থেকে শুরু করে প্রায় সকলপ্রকার ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে। ফলে সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এটার চাহিদাও দাড়ুনভাবে বেড়ে চলছে।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম:

ওয়ার্ডপ্রেস জনপ্রিয় হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো এটার থিম। যে কেউ চাইলে WordPress Development শিখে এটার থিম ডেভলপ করতে পারে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম বলতে মূলত বুঝায় একেকটা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের ডিজাইন এন্ড্র ডেভলপমেন্ট টাকে। ডেভলপাররা তাদের নিজের মতো করে বিভিন্ন ধরনের থিম তৈরি করে থিমফরেস্ট অথবা অন্যান্য মার্কেটপ্লেসে দিয়ে রাখছে। যে কেউ চাইলে সেখান থেকে রেডিমেড থিম কিনে নিয়ে একদিনেই সেই থিম মনের মতো করে কাস্টমাইজ করে বানিয়ে ফেলতে পারে মনের মতোন ওয়েবসাইট। যেকোনো প্রকার ওয়েবসাইট যা মানুষের প্রয়োজন হতে পারে এমন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডেভলপাররা ওয়ার্ডপ্রেস থিম বানিয়ে রেখেছে। আপনার যেটা প্রয়োজন আপনি শুধু সেটা থিমফরেস্টে সার্চ করেলেই পেয়ে যাবেন আপনার প্রয়োজনমতো ওয়ার্ডপ্রেস থিম। শুধু প্রিমিয়াম নয়, গুগলে সার্চ করলেই আপনি অনেক ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস থিম পাবেন। তবে আমি সাজেস্ট করবো আপনি সম্ভব হলে প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। যেটা আপনার জন্যই ভালো হবে। কারণ- ফ্রি থিমগুলিতে অনেক বাক থাকে এবং এটা সাধারণভাবে মনেরমতো সম্পূর্ণরুপে কাস্টমাইজ করা যায়না। এছাড়াও ফ্রি থিমে অনেকরকম সমস্যা থাকতে পারে। তাই এসব সমস্যার মুখোমুখি হতে না চাইলে প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করুন, যেটা আপনার জন্য ভালো হবে।


ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন:

ওয়ার্ডপ্রেসে সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো এটার প্লাগিন সুবিধা। প্লাগিন এমন একটি টুলস যেটা দিয়ে সাইটে গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনালিটি যুক্ত করা যায়। এটা দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে মনের মতো করে অনেক সুবিধা এ্যাড করা যায়। আজকাল WordPress website-এ অনেক ক্ষেত্রেই প্লাগিনের ব্যবহার করা যায়। যেমন- ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি থেকে শুরু করে আপনার সাইটের এসইও এবং ভিজিটর কাউন্টিং পর্যন্ত আপনি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনের মাধ্যমে করতে পারেন। বহুমূখী কাজের জন্য এই প্লাগিন ব্যবহার করা হয়। সবথেকে জনপ্রিয় কিছু প্লাগিন হলো:

  1. Yoast SEO
  2. Contact Form 7
  3. Akismet Anti Spam
  4. W3 Total Cache
  5. WordFence
  6. Jetpack
  7. WooCommerce
  8. WPBakery Page Builder

ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার:

সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপারদের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। ব্যবহারের দিক দিয়ে WordPress সাইট পরিচালনা করা তুলনামূলকভাবে সহজ হওয়ায় অনেকেই ওয়ার্ডপ্রেসের দিকে ঝুকে পড়েছে। আর তাই এটার ডেভলপারদেরও চাহিদাও স্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করছে। ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টটা শিখতে একটু কঠিন হলেও এটার ফল মিষ্টি। আমার এই আর্টিকেলটি লিখা পর্যন্ত একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপারের মাসিক আয় ৪০ হাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্তও হয়ে থাকে। তাই তরুনরা স্বাভাবিকভাবেই এটার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতেছে। কিন্তু WordPress Development-এ প্রোগামিং/কোডিং থাকায় অনেকেই সফল হতে পারতেছেনা। আমি তাদেরকে বলবো সময় নিয়ে ধয্য সহকারে সঠিকভাবে লেগে থাকলে একদিন সফলতা আসবেই আসবে। ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট আসলে তেমন কোনো কঠিন কাজ নাহ। একবার শিখে নিতে পারলে এটার মতো মজা আর কোথাও পাবেন না। তাই যারা WordPress Development শিখতে গিয়ে থেমে যাচ্ছেন আমি তাদেরকে আবারো বলবো সময় নিয়ে ধয্য সহকারে সঠিকভাবে লেগে থাকলে সফলতা অবশ্যই আসবে। ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনাকে প্রথমেই html, css দিয়ে শুরু করে php এবং mySQL ইত্যাদি বিষয়ে ভালোভাবে জানতে হবে।


কোথা থেকে শিখবেন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট?

আমি প্রথমেই আপনাকে সাজেস্ট করবো আপনি প্রথমে ইন্টারনেটে গুগল সার্চ করে শেখা শুরু করেন। গুগল সার্চ করলে প্রচুর পরিমাণ রিসোর্স পাবেন, সেগুলো দিয়ে প্রাথমিকভাবে শেখা শুরু করেন। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে আপনার পরিচিত কেউ ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার থাকলে তার সাহায্য নিন। আপনার পরিচিত কেউ না থাকলে ভালো গাইডলাইনের মাধ্যমে শিখার জন্য ভালো একটা ট্রেইনিং সেন্টারকে সিলেক্ট করতে পারেন। ট্রেইনিং সেন্টারে যেহেতু টাকা দিয়ে শিখবেন তাই সেই ট্রেইনিং সেন্টার সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন। তারা কেমন শিখায়, তাদের বিগত ব্যাচের স্টুডেন্টদের সফলতা কেমন? তারা কি কি শিখাবে, শুধু বেসিক, কাস্টমাইজেশন নাকি থিম ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি বিষয় ভালোভাবে জানবেন। ইন্টারনেটে সার্চ করলে ট্রেইনিং সেন্টারগুলোর বিষয়ে ভালোমন্দ অনেক তথ্য পাওয়া যায়। এতোকিছু যাচাই বাছাই করতে বলার কারণ হচ্ছে আজকাল অনেকেই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ট্রেইনিং সেন্টার খুলে বসে আছে, যাদের মূল লক্ষ্য দায়সাড়াভাবে কোর্স শেষ করে ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। তাই ট্রেইনিং সেন্টার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা থাকা অতীব জরুরী।


লিখেছেন: Md. Alamin Islam

আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!