ইংরেজিতে কথা বলতে শিখার সহয টেকনিক

ইংলিশ স্পিকিংয়ের ভয় | সবাইকে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে সেটাও জরুরী না। তবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ভাইভা সহ কর্মক্ষেত্রের অনেক জায়গায় ইংরেজীতে কথা বলতে হয়। তাই কিছু মানুষের জন্য এটা জরুরী (যাদের জন্য জরুরী না তারা অনুগ্রহপূর্বক পোষ্টটা এড়িয়ে যান)। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় অনেকের যথেষ্ট ইংরেজী জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মন খোলে ইংরেজী তে কথা বলতে পারে না । কিন্তু কেন? কি কারণে এমনটা হয়। আর কি করলেই বা আমরা এই সমস্যা গুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে। এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্টজনদের অনুরোধ করবো একটু ধৈর্য্যের সাথে নিচের লেখাটা একবার মনযোগ সহকারে পড়ুন। হয়তোবা আপনার ইংলিশ স্পিকিংয়ের সমস্যার সমাধানে লেখাটা কাজে দিবে। লেখাটা অনেক আগে লিখেছিলাম। লেখাটা অনেক আগের সংশ্লিষ্টদের সুবিধার্তে রিপোষ্ট করলাম।

ইংলিশ স্পিকিংয়ের ভয় করতে হবে জয়:

১.মনে রাখবেন যেকোন পরিবর্তন যেটা দেরীতে আসে সেটাই দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাড়াহুড়া করে যেটা আসে সেটা তাড়াতাড়ি ধ্বসেও যায়। তাই আপনি স্পিকিংয়ে ভালো করার জন্য এক মাসের একটা টার্গেট গ্রহণ করুন । যেখানে প্রতিদিন আপনার দৈনন্দিন রুটিনে দেড় ঘন্টা সময় স্পিকিংয়ের জন্য বরাদ্দ করুন। কিভাবে সময়টা বন্টন করবেন তা নিচে ব্যাখ্যা করে দেয়া হলো।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

ইংলিশ স্পিকিংয়ের ভয় | ২. সর্ব প্রথম Hesitation ( ইতস্ততভাব) Apathy ( অনীহা) , এবং Shyness ( লজ্জা) নামের তিনটা ব্যাধিকে নিজের মধ্য থেকে খতম করে দিন। ইংরেজীতে কথা বলা কোন গুনাহর কাজ না। অনেক মানুষ চুরি বাটপারি করে, দুর্নীতি, অসভ্য কাজ করে, অশ্লীল পোশাক পড়ে রাস্তায় চলা ফেরা করে, তাদের কোন লজ্জা করে না। আর আপনি একটা ভালো কাজ করবেন, ইংরেজীতে কথা বলবেন এতে আপনার কেন এতো লজ্জা? এটা তো একটা ভালো কাজ, চুরি বাটপারি তো আর না। এটা আপনার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে তাহলে আপনার এতে দ্বিধাগ্রস্ত কিংবা লজ্জাবত কিংবা অপমানিত হওয়ার ভয় কিসের। কে কি বললো না বললো সে দিকে তাকানোর কোন দরকার নেই। আপনি নিজেকে কিভাবে নিচ্ছেন সেটাই মুখ্য বিষয়। নিজেকে পরিপূর্নভাবে বিশ্বাস করুন। বিশ্বাস কে কর্মে রুপান্তরিত করুন। তাহলে আপনি রেডী??? যদি রেডী হন নিচের স্টেপ গুলো দেখুন।

৩. যে কোন একটা বইকে Base করে স্পীকিং শুরু করুন। প্রথমেই আপনি situational conversation এ ব্যবহৃত Speaking Ornament গুলো মুখস্থ করে নিন। তাহলে speaking ornament কি? Speaking Ornament হলো তাৎক্ষণিকক্রমে কখন, কোথায়, কিভাবে রেস্পন্স করবেন তার জন্য কিছু Phrase এবং Sentence. এই গুলো মুখস্থ করুন, নিজে নিজে বার বার রিপিট করুন এবং উপযুক্ত জায়গায় ব্যবহার করুন। আপনার স্মার্টনেস কে বাড়িয়ে দিবে। এই গুলোর জন্য আপনি এস এম জাকির হুসেন স্যারের ” A Passage to the English Language ” বইটার Social English ( Chapter 27) চ্যাপ্টার টা দেখতে পারেন অথবা সাইফুর্সের একটা ছোট ” Flash Card আছে সেটাও দেখতে পারেন।

৪. কথা বলতে হবে ফর্মুলাভিত্তিক যেগুলো কে SMS বা Sentence Making Structure বলা হয় । এই ফর্মুলা গুলো মুখস্থ করে নিন। গ্রামারের দিকে তাকানোর কোন দরকার নাই। কারণ আপনি ভাষাবিদ না, যে আপনাকে গ্রামার জানতে হবে। বাঙ্গালী হয়েও অনেক বাংলা গ্রামার আপনি জানেন না অথচ অবিরত কথা বলে যাচ্ছেন, তাহলে অন্যের গ্রামার নিয়ে এতো টানাটানি করেন কেন? গ্রামারের চিন্তা বাদ দেন। আপনার দরকার ফর্মুলা বা SMS । প্রতিদিন ফর্মুলা গুলো দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে নিজে নিজে বাক্য গঠন করুন আর বারবার পড়ুন । কম্পক্ষে পাচবার। জোড়ে জোড়ে পড়বেন। এতে
– জড়তা দূর হবে
– ভয় দূর হবে
– আত্মবিশ্বাস বাড়বে
এই কাজের জন্য সময় নিন ৩০ মিনিট।

ইংলিশ স্পিকিংয়ের ভয় | ৫. পড়ার সময় বিরক্তি আসতে পারে এই ভেবে যে আমি তো এইগুলো জানি তাহলে কেন পড়বো? মনে রাখবেন আপনি যতই জানেন কেন, কথা না বললে শীতের দিনের নারিকেল তৈল যেভাবে বোতলের ভিতর বসে যায় সেইভাবে আপনার জবানের মধ্যে জড়তা বসে যাবে। শত জানা থাকলেও প্রয়োজনের সময় আপনি বলতে পারবেন না। আপনি যত বেশী বলবেন ততই আপনার জবানের সাথে স্বাভাবিক এই গুলো মিশে যাবে। তখন অবচেতন মনেও অটোমেটিকেলি আপনার মুখ দিয়ে বাংলার মতো ইংরেজি বের হতে থাকবে। আবার বলছি যতবেশী বলবেন ততবেশী
– ফ্লুয়েন্ট হবেন
– মুখের জড়তা দূর হবে
– আত্মবিশ্বাস বাড়বে
তাই মনে অনীহা সত্ত্বেও ধৈর্য সহকারে বলতে থাকুন। মন না চাইলেও বলুন।

৬. চার পাচ ফ্রেন্ডের একটা গ্রুপ গঠন করুন। এবং সে গ্রুপে এই মর্মে একটা নিয়ম প্রণয়ণ করুন যেন যখনই আপনাদের দেখা হবে ইংরেজী ব্যাতিত কথা বলবেন না। যে বাংলায় কথা বলবে তার কাছ থেকে জোড় করে হলেও ট্রিট আদায় করুন। তবে মারামারি করবেন না। মারামারি করা মহাপাপ।

৭. ফর্মাল পরিবেশে অপরিচিত জনের সাথে ইংরেজীতে কথা বলুন ( যদি তিনি দেখেন যে বাংলায় রেস্পন্স করতেছে তাহলে বাদ দিবেন, না হলে ইংরেজীতেই কথা বলবেন ) । পাবলিক প্লেসে দুই একজন বন্ধু থাকলে, কিংবা কোথায় থেকে ফোন আসলে তাদের সাথে ইংরেজীতে কথা বলুন। এতে আপনার পাব্লিক ফোবিয়া দূর হয়ে যাবে । অনেকে আপনার দিকে বড় বড় চোখে তাকাবে, তাদেরকে ভয় পাবেন না কারণ তারা মানুষেই । তারা আপনাকে খাবে না। ভার্সিটিতে, কলেজে কিংবা স্কুলে টিচারদের সাথে ইংরেজীতে কথা বলুন। এতে লজ্জার কিছু নাই। আমার বিশ্বাস উনারা আপনাকে এপ্রিশিয়েট করবে।

৮. অপরিচিত নাম্বার থেকে যখন ফোন আসে কিংবা কাস্টমার কেয়ার গুলো থেকে ফোন আসে তখন ইংরেজীতে রেস্পন্স করুন। সেটা না পারলে অন্ততপক্ষে ফ্রেন্ডের সাথে (Not girlfriend or Boyfriend)স্পাউজের সাথে ইংরেজীতে কথা বলুন। Learn English Today ডট কম ওয়েব সাইট থেকে Telephoning Phrase গুলো মুখস্থ করে নিন। সে গুলোকে ব্যবহার করুন।

৯. প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ মিনিট মনযোগ সহকারে Subtitle সহ যেকোন একজন Good Orator এর স্পীচ শুনুন। প্রতি পাচ মিনিট পর আপনিও সেই শুনাটা কে রিপিট করুন। এটা প্রথম দিকে বিরক্তিকর লাগতে পারে কিন্তু খুবই কার্যকরী। এতে আপনার তিনটা লাভ হবে
— Sentence এর লজিক্যাল স্ট্রাকচার উন্নত হবে।
— একসেন্ট সুন্দর হবে।
— Intonation এর মধুর্যতা বৃদ্ধি পাবে।
২০১০ সালে কোন একদিন আমি ইউটিউবে ভিজিট করতেছিলাম হঠাৎ করে আমার সামনে তৎকালীন ইউএস প্রেসিডেন্ট বারাকা ওবামার স্পিচের একটা ভিডিও আসে এই শিরোনামে “Speech that made Obama president ” (ভিডিওটা এখনো ইউটিউবে আছে)। অটাতে ক্লিক করলাম। তার স্পিচটা এতো সুন্দর আর আকর্ষনীয় লাগলো যে সেই থেকে আমি পুরোপুরি তার স্পিচের ভক্ত হয়ে গেলাম। তখন থেকেই তার স্পিচ গুলো নিয়মিত শুনে আসতেছি। মোবাইলে ডাউনলোড করে রেখে দিয়েছি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময়ে হেডফোন কানে লাগিয়ে একটা স্পিচ ছেড়ে দেই। যা আমাকে আমার একসেন্ট aggrandizement ও Style of Speech amelioration করতে অসম্ভব রকমের হেল্প করেছে।

ইংলিশ স্পিকিংয়ের ভয় | ১০. সর্বশেষ এবং সবচেয়ে কার্যকরী স্টেপ হলো এটা। বাজার থেকে একটা Cue Card কিনুন। Cue Card ওপেন করে একটা আয়নাকে সামনে নিয়ে নিজে নিজে প্রশ্ন করুন এবং নিজে নিজেই উত্তর দিন। এটাকে বলে Self Conversation / Mirror Conversation. একটা Cue Card এ তিনটা পার্ট থাকে। Part – | আর Part – ||| এর জন্য সময় নিন ২০ + ১৫ = ৩৫ মিনিট। আর Part -|| এর জন্য ৫ মিনিট। এর মধ্যে Part -|| তে অংশটা থাকে সেটা বলার সময়, আপনার দৃষ্টি পুরোপুরি আয়নায় প্রতি রাখুন। সেখানে যখন আপনাকে আপনি ইংরেজীতে কথা বলতে দেখেবন তখন আপনার জড়তার সাথে Hesitation, Harassment, Shyness আস্তে আস্তে সব দূর হয়ে যাবে। আপনি দিনে দিনে ফ্লুয়েন্ট হয়ে যাবেন। এবং এটা সবচেয়ে কার্যকরী স্টেপ। আপনি অবশ্যই এটা অনুসরণ করবেন। তাহলে সবশেষে সময়ের হিসাব টা আবার একটু দেখে নিই:

  • SMS ভিত্তিক প্র‍্যাক্টিস – ৩০ মিনিট
  • শুনা এবং বলা ———–২০ মিনিট
  • Cue Card ভিত্তিক প্র‍্যাক্টিস
  • Part-I ———————-২০ মিনিট
  • Part-II————————৫ মিনিট
  • Part-III ———————১৫ মিনিট
  • এই হচ্ছে ৯০ মিনিট বা দেড় ঘন্টা সময়।

আজকে থেকেই শুরু করুন। এক মাস এই এই স্টেপ গুলো রুটিন মোতাবেক অনুশীলন করুন। পরে নিজের অবস্থার উন্নতি নিজেই পরখ করুন। আজকে থেকেই, এখন থেকেই শুরু করে দিন। আল্লাহ সহায় হোন। আমীন।

লিখেছেন: মাসুম ইবনে নূর

আরো পড়ুন:

1 thought on “ইংরেজিতে কথা বলতে শিখার সহয টেকনিক”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!