ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নে যে কোন রাষ্ট্রের জন্য ভূ-রাজনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ কোন দেশের ভৌগোলিক দিকগুলো তার জাতীয় শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অধ্যাপক মর্গ্যান থু, বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থান সবচেয়ে স্থায়ী উপাদান যার উপর কোন দেশের জাতীয় শক্তি নির্ভর করে। বর্তমান পৃথিবীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার উন্নতির ফসল আধুনিক যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমগ্র জাতির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। এরূপ অবস্থায় একে অপরকে ঘনিষ্ঠভাবে কাছে আসতে হয়। তাই নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে পারস্পরিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মানবিক এমনকি প্রাকৃতিক ভূগোলের জ্ঞান থাকা আবশ্যক। সুতরাং বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের গুরুত্ব অপরিসীম।

ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব : নিম্নে ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :

০১। রাষ্ট্রের গঠন সম্পর্কে ধারণা : ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গঠন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ভূ রাজনীতি বিশ্বাস করে রাষ্ট্রের গঠনের ওপর তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মানবিক, সামাজিক ইত্যাদি বিষয় জড়িত। ভূ রাজনীতি তাই রাষ্ট্রের গঠন সম্পর্কে আলোচনা করে। রাষ্ট্রের গঠন প্রকৃতি কিরূপ হলে তার ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ক কেমন হবে ভূ-রাজনীতি সে সম্পর্কে সুশৃঙ্খল ধারণা প্রদান করে।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

০২। রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি নিয়ন্ত্রণ : ভূ-রাজনীতি রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। একটি রাষ্ট্রের সাথে তার
প্রতিবেশী বা অন্যান্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক কীরূপ তার ওপর নির্ভর করেই একটি রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারিত হবে। রাষ্ট্রের ভৌগোলিক
অবস্থান, আয়তন, সম্পদ, বহিঃবিশ্বে প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নির্ভর করেই একটি রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করে
থাকে। সুতরাং রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি প্রণয়নে ভূ-রাজনীতির অধ্যয়নের ভূমিকা অপরিসীম।

০৩। রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান নির্দেশ : একটি রাষ্ট্রের জন্য শুধু ভৌগোলিক আয়তনই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, এর ভৌগোলিক অবস্থানও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক স্থানে অবস্থিত হলে অতি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রও বিশ্ব রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। আর ভূ-রাজনীতি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান নির্দেশ করে। ভূ-রাজনীতি
অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারি।

০৪। অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ : বর্তমান বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যে যে প্রতিযোগিতা সেটা মূলত তাদের অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করেই। বাজার সৃষ্টি, যোগাযোগ, উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ইত্যাদি নির্ধারণে ভূ-রাজনীতির ভূমিকা অপরিসীম সুতরাং ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক নীতি সংক্রান্ত ধারণা লাভ করা যায়।

০৫। সামরিক নীতি নির্ধারণ : সামরিক নীতি নির্ধারণে ভূ-রাজনীতির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেয়া যেতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শুধুমাত্র ভৌগোলিক কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের কোন ক্ষতির শিকার হতে হয়নি। অথচ ইউরোপের রাষ্ট্রগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সামরিক নীতি
নির্ধারণে ভূ-রাজনীতির ভূমিকা নিম্নরূপ : ক. জাতীয় নিরাপত্তা নির্ধারণ: কোন দেশের নিরাপত্তা কাঠামো কী হবে সেটা তার ভূ-রাজনৈতিক কাঠামোর উপর নির্ভরশীল থাকে। যেসব দেশ সমুদ্র বেষ্টিত তাদের সামরিক কাঠামো এক রকম আবার যেসব দেশ স্থল বেষ্টিত তাদের সামরিক কাঠামো অন্য রকম। খ. সামরিক সরঞ্জাম জোগাড় : সামরিক সরঞ্জাম জোগাড় করার ক্ষেত্রেও ভূ-রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। কোন দেশ কী
ধরনের আক্রমণের শিকার হতে পারে সেসব বিষয়কে বিবেচনা করেই তাদের সামরিক সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
গ. অস্ত্র প্রতিযোগিতা : ভূ-রাজনীতির কারণে অনেক দেশের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায়। যেমন- ভারত
পাকিস্তান প্রতিবেশী দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে অস্ত্র প্রতিযোগিতা চলছে। কাশ্মীরকে নিয়ে তাদের যে দ্বন্দ্ব তার
আশু কোন সুরাহা তো সম্ভব হচ্ছে না; বরং অস্ত্র ক্রয়ে উভয় রাষ্ট্রই বিলিয়ন ডলার খরচ করছে।
ঘ. প্রতিবেশী নিয়ন্ত্রণ প্রতিটি রাষ্ট্র তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ডোমিনেট করে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। ভূ-রাজনৈতিকভাবে
শক্তিশালী একটি রাষ্ট্রের পক্ষে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ খুবই সহজ। যেমন- ভারত ভূ-রাজনৈতিক কারণেই ভুটানের ওপর তার
নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

০৬। আঞ্চলিক ভৌগোলিক রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা : একটি রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক শক্তি, অঞ্চলের আয়তন, অবস্থান, সম্পদ ইত্যাদি ভিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতি ভিন্ন হতে পারে। এসবকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে আঞ্চলিক রাজনীতি। অনেক সময় বিচ্ছিন্নতার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

০৭। রাষ্ট্রের সম্পদ সম্পর্কে ধারণা : একটি দেশের রাজনৈতিক শক্তি, সামাজিক শক্তি ইত্যাদি প্রায়শই নির্ভর করে সে দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর। কোন রাষ্ট্র খনিজ ও অন্যান্য সম্পদ সমৃদ্ধ হলে তার ভূ-রাজনৈতিক শক্তিও বেশি হয়। ভূ-রাজনীতি অধ্যয়নের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সম্পদ সম্পর্কে তথ্যপ্রাপ্তি ঘটে। ঠাণ্ডা লড়াইয়ের অবসান, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ও দ্বিমেরু বিশ্ব পদ্ধতির অবলুপ্তির পর আন্তর্জাতিক ভূ
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে রুশ-মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্যারাডাইস আর কার্যকর নয়। তবে একথা সত্যি, ভূ-রাজনৈতিক গণনা এখনো রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাই বলা যায়, ভূ রাজনীতির ভূমিকা অপরিসীম। কেননা ভূ-রাজনীতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে নিজ রাষ্ট্রের সম্পদ যথাযথ ব্যবহার করে বৃহৎ পরাশক্তিতে পরিণত হওয়া যায়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নের ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান পৃথিবীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির ফলে আধুনিক যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমগ্র জাতিসমূহের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে এক পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। এরূপ অবস্থায় তাদেরকে বিভিন্নভাবে এক অপরের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসতে হয়। তাই নিজেদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হলে তাদের পারস্পরিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মানবিক এমনকি প্রাকৃতিক ভূগোলের জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এদিক থেকেই ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। নেপোলিয়ান এজন্যই একবার বলেছিলেন, একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি তার ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রকৃতি দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে।
বর্তমান যুগে ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ভূ-রাজনীতিকে সামরিক শক্তি এবং আগ্রাসনের পথে সমরূপে দেখার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে সোভিয়েত ইউনিয়ন হৃতভূমির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসী আক্রমণের প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্রগুলো একটি সামরিক চুক্তি করে, যার নাম ন্যাটো। ন্যাটোর সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রগুলো সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে একে অন্যকে সাহায্যে প্রতিশ্রুতি দেয়।
ভৌগোলিক অবস্থান বিভিন্নভাবে কোন দেশের জাতীয় শক্তিকে বৃদ্ধ অথবা খর্ব করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থানকে বিচার করলে আমরা দেখতে পাই যে, পৃথিবীর অন্যান্য মহাদেশ হতে চতুর্দিক হতে কয়েক হাজার মাইল জলবেষ্টিত হলে তার শক্তি অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ অন্যান্য বৃহৎ শক্তি তাকে অতি সহজে আক্রমণ করতে পারে না। অনুরূপভাবে ইংলিশ চ্যানেল দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্নতা ইংল্যান্ডের জাতীয় শক্তিকে বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। ইতিহাসলব্ধ জ্ঞান থেকে আমরা জানতে পারি যে, জুলিয়াস সিজার, দ্বিতীয় ফিলিপস, নোপেলিয়ান অথবা হিটলার চেষ্টা করেও ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে ইংল্যান্ডের আক্রমণ করতে পারেনি এবং তার কোনরূপ ক্ষতি সাধনে সক্ষম হয় নি।

ভূ-রাজনীতির অন্যান্য গুরুত্বগুলো নিম্নরূপঃ

০ ১। রাষ্ট্রের গঠন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

০ ২। রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি সম্পর্কে ভূ-রাজনীতি ব্যাখ্যা প্রদান করে।

০ ৩। রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান নির্দেশ করে।

০ ৪। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নীতির ব্যাখ্যা প্রদান করে।

০ ৫। রাষ্ট্র বা আঞ্চলিক ভৌগোলিক রাজনীতি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায় এবং

০ ৬। রাষ্ট্রের সম্পদ রাজি সম্পর্কে তথ্য প্রাপ্তি ঘটে।

এছাড়া কার্ল ইউসোফার (1869-1946) তার সহযোগীদের নিয়ে যে ভূ-রাজনীতির গুরুত্ব অবতারণা করেন, তাকে প্রধান পাঁচটি ধারণায় প্রকাশ করা যায়। ভাগগুলো নিম্নরুপঃ

০ ১। সামরিক শক্তি অর্জনের জন্য একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করা দরকার যেখানে ভূমি প্রধান নিয়ামক।

০ ২। জার্মানরা একটু প্রভুত্বশালী (Master) জাতি, বিশ্বের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে তাই অধিক ভূমির জন্য তাকে কৌশলী হতে হবে।

০ ৩। যে সমস্ত এলাকা, ভাষা ও জাতি অর্থনৈতিকভাবে জার্মান স্বার্থের জন্য উপযোগী সে সমস্ত এলাকা জার্মানির শাসনাধীনে আসবে।

০ ৪। পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ আফ্রিকা এশিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে জার্মানি অজেয় অবস্থানে পৌঁছে যাবে এবং পৃথিবীব্যাপী কর্তৃত্ব করবে।

০৫। পূর্ব ইউরোপেয় ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও বান্টিক রাষ্ট্রগুলো জার্মানি দখলে আনবে।

বর্তমান বিশ্বে ভূ-রাজনীতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে পরস্পরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে জাতীয় স্বার্থ নিয়ে দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর ওপর তাদের সামরিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক দিক দিয়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভূ-রাজনীতি প্রত্যেকটি দেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!