কুর্দি সংকট | কুর্দিরা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব, তুর্কি এবং ফারসিদের পর একটি বৃহৎ জাতিগোষ্টী। এরা আরব বিশ্বে সর্ববৃহৎ চতুর্থ জাতিগোষ্ঠী। এদের অবস্থান তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক, ইরান সীমান্তে ও আর্মেনিয়ার কিছু অংশ জুড়ে।
কুর্দি সংকট | কুর্দিরা সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে আসছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর ১৯২০ সালে তুরস্কের সাথে পশ্চিমারা সেভরা চুক্তি করে, যাতে উল্লেখ করা হয় গণভোটের মাধ্যমে কুর্দিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠন করা হবে। কিন্তু কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে নবগঠিত তৎকালীন তুর্কি প্রজাতন্ত্র তাতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ১৯২৩ সালে লুসান চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমারা তুরস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং গণভোটের দাবী বাতিল করা হয়। সেই থেকে কুর্দিদের উপর নেমে আসে চরম অমানবিক নির্যাতন। আর এখন কুর্দিরা হচ্ছে সবথেকে বেশি নির্যাতিত জাতিগোষ্ঠী।
কুর্দিদের ব্যবহার করছে সবাই সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে। পশ্চিমা বিশ্ব তাদেরকে ব্যবহার করে আরব বিশ্বে সংঘাতকে জিইয়ে রেখেছে। পশ্চিমারা খুব ভাল করে জানে কুর্দিস্তান দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে তারা মার্ক্স-লেলিন, মা-ও সেতুং এর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।
কুর্দি সংকট | তাই পশ্চিমা বিশ্ব কুর্দিদের সাথে সন্ধি করে (পশ্চিমাদের সৃষ্টি) আইএসকে মারার নাটক করে এবং তাদেরকে দিয়ে তুর্কীদের সাথে পুরনো দ্বন্দ্ব জ্বালিয়ে দিয়ে সটকে পড়েছে অর্থাৎ পেছন দিয়ে ছুরি মেরে সরে পড়েছে।
এমতাবস্থায়, রাশিয়া- চীন কখনোই তুরস্কের সাথে সম্পর্ক খারাপ করতে চাইবে না, কারণ ভৌগোলিক দিক বিবেচনায় তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। আর তুরস্ক ইরান তাদের নিজ ভূখণ্ড হারাতে চাইবে না। তাই আপাততঃ কুর্দিদের কুর্দিস্তান নামের স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরীর স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।
কুর্দি সংকট | প্রায় ১০০ বছর ধরে নির্যাতিত কুর্দিরা মধ্যপ্রাচ্যের সর্ববৃহৎ চতুর্থ জনগোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে প্রতিদিন অমানবিক অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ-নিপীড়ন সহ্য করতে হচ্ছে। তাই তাদেরকে উচিত স্বাধীনতা দেওয়া। তাদের যেহেতু নিজস্ব ভাষা, নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব স্বকীয়তা, ওয়াইপিজি নামে আলাদা সামরিক বাহিনী আছে।
কুর্দি সংকট | দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে এই উপমহাদেশ বিভক্ত হয়েছিল। আবার পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ১৯৭১ সালে আলাদা হয়ে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন দেশ হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায় অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে। তাছাড়া দুই দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল আলাদা। যত দেশ স্বাধীন হয়েছে সব দেশই স্বাধীন হয়েছে আলাদা জাতি, সংস্কৃতি, ভাষা, বৈশিষ্ট্য, স্বকীয়তার জন্য।
কিন্তু কুর্দিস্তান রাষ্ট্রের স্বপ্ন আজও তাদের কাছে অধরা থেকে গেল।
লিখেছেন: মোঃ আরিফ বিল্লাহ্