সেনাবাহিনীতে কত ধরনের বিভাগ রয়েছে?

সেনাবাহিনীর বিভাগ বা কোর গুলোর নাম খুব সংক্ষিপ্ত এবং সহজবোধ্য করে নিচে দেয়া হল :

ক। আর্মার্ড – ট্যাঙ্ক বা সাঁজোয়া বাহিনী।
খ। আর্টিলারি – কামান বা গোলন্দাজ বাহিনী।
গ। সিগন্যালস – এরা ওয়্যারলেস, টেলিফোন, রাডার ইত্যাদির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন ও রক্ষা করে।
ঘ। ইঞ্জিনিয়ার্স – এরা যাবতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ ছাড়াও পদাতিক বাহিনীর কাজও করতে সক্ষম।
ঙ। ইনফ্যান্ট্রি – পদাতিক বাহিনী।
চ। আর্মি সার্ভিস কোর – এরা সেনাবাহিনীর ফ্রেশ এবং ড্রাই রেশন, গাড়ি, চলাচলের তেল ইত্যাদি সরবরাহ করে।
ছ। এএমসি (আর্মি মেডিক্যাল কোর) – সেনাসদস্য ও তার পরিবারের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে।
জ। অর্ডন্যান্স – যুদ্ধ ও শান্তিকালীন সময়ে ব্যাবহারের জন্য বিভিন্ন সাজ সরঞ্জাম,পোষাক,নিত্য ব্যাবহারের দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ করে।
ঝ। ইএমই (ইলেক্ট্রিক্যাল এ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর) – বিভিন্ন ধরণের যন্ত্র তৈরি ও গাড়িসহ অন্যান্য বিভিন্ন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশের মেইন্ট্যানেন্সের কাজ করে।
ঞ। মিলিটারি পুলিশ – এরা সেনানিবাসের ভেতর পুলিশিং, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত থাকে।
ট। এইসি (আর্মি এডুকেশন কোর) – সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্কুল ও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে।

এছাড়াও আর্মি ডেন্টাল কোর, রিমাউন্ড ভেটেরেনারী এ্যান্ড ফার্ম কোর , ক্লারিক্যাল কোর ইত্যাদি আরও কিছু ছোটখাট কোর বা বিভাগ রয়েছে ।

এখনো amarStudy অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড না করে থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করতে এখানে যানঃ Download Now. অ্যাপটি বিসিএস’সহ প্রায় সব রকমের চাকুরির প্রস্তুতির সহায়ক।

সেনাবাহিনীর পদবীসমুহ কি ?

সেনাবাহিনীতে মুলতঃ তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে ।
১। অফিসার।
২। জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও)।
৩। নন কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) ও অন্যান্য পদবী।

সৈনিক হিসেবে যোগ দিতে কি যোগ্যতা লাগে এবং কি কি পরীক্ষা দিতে হয় ?

এসএসসি পাশ করে রিক্রুটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৈনিক হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া যায়। প্রায়ই বিভিন্ন স্টেডিয়ামে দেখা যায় এ ধরণের রিক্রুটিং। এক দিনের মধ্যেই লিখিত, মৌখিক এবং মেডিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেরকে এই পদে যোগ দিতে ডাকা হয়। এরা সফলভাবে ছয় মাস ট্রেনিং সম্পন্ন করতে পারলেই কেবল সৈনিক হিসেবে চাকরি প্রাপ্ত হয়। এদের ট্রেনিং কোর, আর্মস বা সার্ভিস ভেদে বিভিন্ন স্থানে হয় ।

সৈনিক পদে ভর্তি হলে কোন পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়া যায়? ধাপগুলো কি কি ?

একজন সৈনিক সফলতার সাথে চাকরি করলে অনারারী ক্যাপ্টেন পর্যন্ত হতে পারে। ধাপগুলো হচ্ছেঃ

১। সৈনিক
২। ল্যান্স কর্পোরাল
৩। কর্পোরাল
৪। সার্জেন্ট
৫। ওয়ারেন্ট অফিসার
৬। সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার
৭। মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার
৮। অনারারী লেফটেন্যান্ট
৯। অনারারী ক্যাপ্টেন

এনসিও এবং জেসিও কারা ?

এনসিও হচ্ছে নন কমিশন্ড অফিসার এবং জেসিও বা জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, যেখানে সৈনিকদের মধ্য থেকে পদোন্নতি হয়ে ধাপে ধাপে এই পদগুলো প্রাপ্ত হয়। উপরের প্যারার কর্পোরাল ও সার্জেন্ট র‍্যাঙ্ক দুটি এনসিও এবং ওয়ারেন্ট অফিসার এর পরবর্তী পদগুলো জেসিও হিসেবে বিবেচিত।

উল্লেখ্য, জেসিওরা দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী। এছাড়াও কোন সৈনিক যদি অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শনে সক্ষম হয় সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে তাকে অফিসার হিসেবে জিএল কমিশনও প্রদান করা হয়।

সেনা বাহিনীতে অফিসারদের পদবীগুলো কি কি?

সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট থেকে জেনারেল পর্যন্ত মোট ১০ টি পদ আছে।

০১। সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট
০২। লেফটেন্যান্ট
০৩। ক্যাপ্টেন
০৪। মেজর
০৫। লেফটেন্যান্ট কর্নেল
০৬। কর্নেল
০৭। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
০৮। মেজর জেনারেল
০৯। লেফটেন্যান্ট জেনারেল
১০। জেনারেল

অফিসার হতে হলে কি যোগ্যতা থাকতে হয় ?

সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট নামে কোন পদ এখন নেই। সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট এর বদলে এখন জেসি বা জেন্ট্যালমেন্ট ক্যাডেট Rank দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত এখন অফিসার ক্যাডেট বা জেসিদের তিন বছর মেয়াদী কোর্স সম্পন্ন করতে হয় তারপর সরাসরি লেফট্যানেন্ট এর Rank প্রদান করা হয়।

কারা কিভাবে সেনা অফিসার হয়? এদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? আর কি কি যোগ্যতা লাগে?

মুলত এইচএসসি পাশের পর একজন সেনা কর্মকর্তা হবার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে আবেদন করতে পারেন। এখানে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের সেনা অফিসারদের মধ্যে গড়ে ৭০-৭৫ ভাগই আসে ক্যাডেট কলেজ থেকে। কিন্তু এর মানে এই না যে ক্যাডেট কলেজে পড়লেই সেনা অফিসার হতে পারবে।

বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজ গুলো থেকে প্রতি বছর আনুমানিক কম বেশী ৬০০ (১২ টি ক্যাডেট কলেজে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন করে) জন যদি পাশ করে বের হয়, এর মধ্যে আর্মিতে সুযোগ পায় কিন্ত গড়ে মাত্র ৮০- ১০০ জন। কারণ প্রতি ব্যাচে অফিসার হিসেবে বাকি ৫০০ জন কিন্তু অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। আমার জানা মতে, সকল ক্যাডেটদের জন্যই সেনা বাহিনীতে যোগদানের পরীক্ষায় অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক যদিও একবারে ১০০ ভাগ ক্যাডেট সেনা অফিসার হতে চায় এরকম বলা যাবে না।

এই বিষয়ে নিশ্চয়ই কারো দ্বিমত নেই যে ক্লাস সেভেনে লক্ষ লক্ষ মেধাবী কিশোরের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে যাওয়া কিছু ভাগ্যবান এবং অসাধারণ মেধাবী ছেলেই পড়ার সুযোগ পায় ক্যাডেট কলেজগুলোতে (প্রতি কলেজে মাত্র ৫০ জন করে)। এদের মধ্যেও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে গড়ে প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ মাত্র সুযোগ পায় সেনা অফিসার হওয়ার।

এছাড়া বাকি ২৫-৩০ ভাগ অফিসার আসে দেশের অন্যান্য বেসামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যার মধ্যে অগ্রগণ্য হচ্ছে নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, রাজউক কলেজ, বি এ এফ শাহীন কলেজ, আদমজী ক্যান্টঃ কলেজ সহ অন্যান্য সরকারী ও বেসরকারী কলেজ। ক্যাডেট কলেজের পরই সবচে বেশি অফিসার সম্ভবত নটরডেম কলেজের। এছাড়াও দেশের অন্যান্য কলেজগুলো থেকেও সেনা অফিসার হিসেবে মিলিটারি একাডেমি তে যোগ দেবার সু্যোগ পায়।

কাজেই সেনা অফিসার হতে গেলে এই সব মেধাবী ছেলে মেয়েদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে আপনাকে। এখানে বুয়েট, মেডিক্যাল বা অন্যান্য ভর্তি পরীক্ষার সাথে পার্থক্য এটাই যে শুধুমাত্র মেধার বিচারে সেনা অফিসার নির্বাচন করা হয় না। মেধা অবশ্যই অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর কিন্তু এর সাথে আরও অনেক বিষয় বিবেচনা করা হয়।

সেনা অফিসার হতে বি এম এ তে ক্যাডেট হিসেবে সুযোগ পেতে হলে কি কি পরীক্ষা দিতে হয়?

বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার হওয়ার জন্য ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিতে যে কয়টি পরীক্ষা দিতে হয় তা হচ্ছেঃ

১। প্রাথমিক মেডিক্যাল
২। প্রাথমিক ভাইভা
৩। লিখিত পরীক্ষা
৪। আইএসএসবি বা চারদিন ব্যাপী আই কিউ, মনস্তাত্তিক, ভাইভা, নেতৃত্বের গুণাবলী, কমিউনিকেশন স্কিল, প্ল্যানিং,শারীরিক যোগ্যতা ইত্যাদির উপর পরীক্ষা।
৫। চুড়ান্ত মেডিক্যাল ও সাঁতার পরীক্ষা
৬। চুড়ান্ত ভাইভা

পরীক্ষাগুলো কোন কোন বিষয়ের উপর হয়? কোন পরীক্ষার পর কোন পরীক্ষা হয়?

প্রথমেই হয় প্রাথমিক মেডিক্যাল এবং ভাইভা পরীক্ষা। অনেকের ধারণা খুব লম্বা না হলে আর্মি অফিসার হওয়া যায় না। কিন্তু সত্য হচ্ছে, অফিসারদের জন্য ন্যুনতম উচ্চতা ৫ ফুট চার ইঞ্চি। বয়স ১৮ হতে ২১। এছাড়াও ভাইভা পরীক্ষাতে পরীক্ষার্থীর বিশেষ করে ইংরেজীতে দক্ষতা ও কমিউনিকেশন স্কিল দেখা হয়।

এই প্রাথমিক মেডিক্যাল ও ভাইভা উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হয় যা ক্ষেত্র বিশেষে প্রাথমিক পরীক্ষার এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনেকটা বিশ্ববিদ্যালয় ভতি পরীক্ষার আদলে হয়।

প্রতিটি লং কোর্সে যোগদানের জন্য গড়ে আনুমানিক বিশ থেকে তিরিশ হাজার পরীক্ষার্থী থাকলেও লিখিত পরীক্ষাতে এক-দেড় হাজারের বেশি উত্তীর্ণ হয় না। এই এক থেকে দেড় হাজার থেকে আবার গড়ে ৮০-৯০ জন চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন আইএসএসবির (আন্তঃ বাহিনী নির্বাচন পর্ষদের) চারদিন ব্যাপী পরীক্ষার মাধ্যমে।

বছরে কয়বার এই ভর্তি প্রক্রিয়া চলে? মোট কয়জনকে ভর্তি করা হয়?

বছরে দুইবার এই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। নির্দিষ্ট কোন কোটা নেই এখানে যে কত জন ভর্তি করা হবে। যোগ্যতা সাপেক্ষে কোন ব্যাচে যেমন ১৮০ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে তেমনি যোগ্য কাউকে না পাওয়ায় মাত্র ৪০ জনকে নির্বাচিত করার ইতিহাসও আছে। এখানে সংখ্যা পুরো করতে গিয়ে কখনও মানের সাথে সমঝোতা করা হয় না।

এবং এইখানকার নির্বাচকরা সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারেন বলেই জানি। অনেক জেনারেলের ছেলে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে এরকম ঘটনা আছে ভুরি ভুরি। বাবার পরিচয়, রাজনৈতিক প্রভাব, মামা চাচার টেলিফোন সব কিছুকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে বলেই এই সিলেকশন পদ্ধতি নিয়ে কোন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে কখনও শুনিনি।

নিরবাচনের ক্ষেত্রে মেধার পাশাপাশি আর কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়?

বুঝতেই পারছেন এতগুলো পরীক্ষায় পাস করতে হলে আপনার যোগ্যতার পাশাপাশি ধৈর্যও থাকতে হবে। অন্যান্য সকল অ্যাডমিশন টেস্টের (বুয়েট,মেডিক্যাল, বিশ্ববিদ্যালয়) মত ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পরই সেনা বাহিনীতে আফিসার পদে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। অন্যান্য প্রায় সব অ্যাডমিশন টেস্টে শুধু মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হলেও সেনাবাহিনী এক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম।

এখানে মেধার পাশাপাশি তার মানসিকতা, নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলী, কমিউনিকেশন স্কিল, ইংরেজীতে দক্ষতা, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড বলতে একজন গরীব কিন্তু সৎ স্কুল মাস্টারের ছেলেকে একজন ঘুষখোর আমলার ছেলের চেয়ে প্রেফার করা হয়। এছাড়া শারীরিক যোগ্যতার বিষয়টি তো আছেই।

সেনা অফিসারদের কি পড়াশোনা করতে হয়? নাকি শুধু পিটি প্যারেড করলেই চলে?

এইচএসসি পাশের পর সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেও অফিসার হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে মিলিটারি একাডেমীতে দু বছরের প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইদানিং কালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল এর) অধীনে গ্র্যাজুয়েশন সফলভাবে শেষ করা। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার আগে সরকারী গেজেটে তার নাম প্রকাশিত হবে না।

এর পরবর্তী সময়ে তাকে উচ্চতর পড়াশোনা এবং পোষ্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে হয়। নিজের পেশাগত বিষয়ের উপর বাধ্যতামূলক চার পাচটি কোর্স ছাড়াও স্টাফ কলেজ, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, এম আই এস টি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল সহ দেশে ও বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহন করতে হয় সেনা অফিসারদেরকে। ইঞ্জনিয়ার অফিসারদেরকে বাধ্যতামুলকভাবে সিভিল, ইলেক্ট্রিকাল এন্ড মেকানিক্যাল,কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে হয়।

অনেকে দুই বা ততোধিক বিষয়ের উপর পোষ্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। সেনাবাহিনীতে পি এইচ ডি করা অফিসারের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। কাজেই আমাদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা যে এইচএসসি পাশ করেলেই অফিসার হওয়া যায় তা যে কতটা ভ্রান্ত তা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

এছাড়াও বাধ্যতামূলক যে সকল কোর্সে অংশগ্রহন করতে হয় তা হলঃ

১। বেসিক কোর্স – কোর ভেদে সাধারনত ৪ মাস হতে ১০ মাস সময়সীমার হয়, সাধারণত সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট/ লেফটেন্যান্ট অবস্থায় এই কোর্স করানো হয়। প্রতিটি অফিসারকেই নিজ নিজ প্রফেশনাল জ্ঞান প্রদান করাই এই কোর্সের উদ্দেশ্য।

২। অস্ত্রের উপর কোর্স – সব অফিসারকেই অস্ত্র চালনায় অত্যন্ত দক্ষ শার্প শুটার করে তোলার জন্য বি এম এ তে দুই বছর প্রচুর অনুশীলন ও এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে হয়। অফিসার হবার পর পুনরায় লেফটেন্যান্ট অবস্থায় তিন মাস ব্যাপী একটি কোর্স করানো হয় যাতে আগের শেখা বিষয়গুলো তারা ঝালিয়ে নিতে পারে।

সাধারণভাবে বলা যায় যে এই প্রশিক্ষণ গ্রহনের ফলে প্রতিটি অফিসারই সব ধরণের অস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করে, এক একজন দক্ষ মার্কস ম্যান হয়ে ওঠে এবং সব ধরণের অস্ত্র চালনায় প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী হয়। সেনা অফিসারদের মধ্যে অনেক স্নাইপার ও রয়েছেন।

৩। কমান্ডো কোর্স – প্রায় তিন মাস সময়সীমার এই কোর্সটি প্রচন্ড কষ্টসাধ্য একটি কোর্স যা প্রত্যেক সেনা অফিসারকে বাধ্যতামূলক ভাবে করতে হয়। এই কোর্সে প্রতিটি অফিসারকে আমানুষিক কষ্টের মধ্যে রাখা হয়। এমনিতেই বি এম এর প্রশিক্ষণ প্রচন্ড কষ্টসাধ্য। অফিসার হবার এক থেকে দুই বছরের মধ্যে এই কমান্ডো কোর্স করতে হয়। এই তিন মাসের কষ্ট এমনকি বিএমএ জীবনের দুই বছরের অমানুষিক কষ্ট কেও হার মানায়।

প্রায় প্রতিদিনই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৬ কিমি থেকে ৪০ কিমি পর্যন্ত দৌড়, অ্যাসল্ট কোর্স(বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম),টানা দৌড়ে উঁচু উঁচু ৭ টি পাহাড় অতিক্রম, আনআর্মড কম্ব্যাট ট্রেনিং (মার্শাল আর্টের সামরিক সংস্করন), ট্র্যাকিং, ম্যাপ অনুসরণ করে দুর্গম এলাকায় ডে মার্চ বা নাইট মার্চ,কমান্ডো কৌশল অনুসরন করে শত্রু এলাকার ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার অনুশীলন,খাবার ছাড়া দুর্গম এলাকায় বেঁচে থাকার সারভাইভাল ট্রেনিং, উড়ন্ত হেলিকপ্টার থেকে র‍্যাপেলিং সহ অনেক দুঃসাহসিক প্রশিক্ষণ নেয়ার পাশাপাশি রণকৌশলের ওপর পড়াশোনা করতে হয় এ সময়।

এছাড়া নির্বাচিত অফিসাররা আরও ৬ মাস ব্যাপী কমান্ডো প্রশিক্ষণ নেয় যেখানে উপরে উল্লেখিত প্রশিক্ষণ ছাড়াও আরও অনেক দুঃসাহসিক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়। প্যারাশুট নিয়ে ফ্রী ফল, জাম্প মাস্টার, রিগ্যার ইত্যাদি কমান্ডো অনুশীলনের অন্তর্গত। এ ধরণের প্রশিক্ষনে প্রশিক্ষিত দের জাতিসংঘে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কমান্ডোদের মটো হচ্ছে do or die . এই প্রশিক্ষণ চলাকালে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ক্যাজুয়াল্টি তো অহরহ ঘটে। প্রতিটি সেনা অফিসারই এক একজন বেসিক কমান্ডো।

৪। জুনিয়র স্টাফ কোর্স – এ কোর্স টিও বাধ্যতামূলক ভাবে সকল ক্যাপ্টেন র‍্যাঙ্কের অফিসারদের করতে হয়। এটি চার মাস ব্যাপী এবং সম্পূর্ণ পড়ালেখার একটি কোর্স। এখানে রণকৌশল বা ট্যাকটিকস সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হয়।

উপরের সবগুলো কোর্সই মানের দিক থেকে বিশ্ব মানের এবং প্রতিটি কোর্সেই উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক বিদেশী অফিসার যোগদান করে। শুধু উপমহাদেশের অফিসাররা নয়, মধ্যপ্রাচ্যের, আফ্রিকা, ইউরোপ মহাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্যাপ্টেন এবং মেজর র‍্যাঙ্কের অফিসাররা এইসব সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে বাংলাদেশে আসে এবং আমাদের প্রশক্ষনের মানের ভুয়সী প্রশংসা করে থাকেন।

এমনকি আধুনিক বিশ্বে পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত ইউ এস আর্মি এবং মেরিন অফিসার এবং সেনারা এই ধরণের প্রশিক্ষনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সাথে প্রতি বছরই যৌথ সামরিক অভিযান চালায় যা ‘ব্যালান্স বাফেলো’ এক্সারসাইজ নামে পরিচিত।

যারা বাংলাদেশ আর্মির অফিসারদের প্রশিক্ষণের স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কে সন্দিহান,তাদের জন্য আশা করি উপরের তথ্যগুলো সহায়ক হবে। এছাড়া আরও অনেক কোর্স আছে যেগুলো চাকরির সিনিয়রিটি অনুযায়ী সম্পন্ন করতে হয়। এর মধ্যে অনেকগুলো কোর্স দীর্ঘ সময় ব্যাপী পরিচালিত হয় যেগুলো সফল ভাবে সম্পন্ন করলে প্রতিটির জন্য আলাদা ভাবে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল হতে পোষ্ট গ্র্যাজুয়েশনের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

এছাড়া আরও কয়েকটি কোর্স হচ্ছে –

PSC – মেজর দের জন্য সবচে গুরুত্বপূর্ণ কোর্স হচ্ছে ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কোর্স। এটি এক বছর ব্যাপী একটি কোর্স, যেটি সফল ভাবে সম্পন্ন করলে অফিসাররা নামের শেষে psc লেখেন।

NDC – ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে এই কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। এখানে আর্মির কর্নেল পদবীর অফিসার সহ বেসামরিক প্রশাসনের নির্বাচিত কিছু জয়েন্ট সেক্রেটারী,পুলিশের ডি আই জিরা একসাথে এই কোর্স করেন।

NDU – এটিও কর্নেল এবং তদূর্ধ পদবীদের জন্য একটি কোর্স।
AFWC – armed forces war course , এটি লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং তদূর্ধ র‍্যাঙ্কের অফিসারদের জন্য।

উপরোক্ত চারটি কোর্স সম্পন্নকারী অফিসাররা তাদের নামের শেষে সংক্ষেপে কোর্সের নামগুলি উল্লেখ করেন। এই চারটি কোর্সেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশী সিনিয়র অফিসাররা যোগদান করেন।

আরও অসংখ্য কোর্স আছে আর্মির বিভিন্ন কোরের অফিসারদেরকে ওই কোরের ওপর একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। যেমন ইনফ্যান্ট্রি, আর্টিলারি, আর্মার্ড ইত্যাদি কোরের অফিসারদের দেশে এবং পরে চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, ভারত ইত্যাদি দেশ থেকে এক বছরের জন্য কোর্স করিয়ে আনা হয়।

ইঞ্জিনিয়ার্স , ইএমই, অর্ডন্যান্স অফিসাররা বুয়েট, এমআইএসটি সহ দেশে বিদেশে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করে। অর্থাৎ প্রতিটি কোরের অফিসারকেই তার নিজ নিজ পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এবং নিজের পেশায় একজন বিশেষজ্ঞ হবার জন্য প্রতিনিয়ত দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন কোর্সে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয়।

এভাবে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট থেকে শুরু করে জেনারেল পর্যন্ত প্রতিনিয়ত একজন অফিসারকে প্রচন্ড পড়াশোনার মধ্যে থাকতে হয়। কেউ পড়াশোনার বিষয়ে সিরিয়াস না হলে তার ক্যারিয়ার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং পদোন্নতিও একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এভাবে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ ও পড়ালেখার ফলে একজন অফিসারের কর্মদক্ষতা বাড়তে থাকে এবং তার সিনিয়রিটির সাথে সাথে পেশাগত উৎকর্ষ লাভ করে।
যারা পড়াশোনায় ফাঁকি দেয়ার ইচ্ছায় আর্মিতে অফিসার হিসেবে জয়েন করতে চান, তারা কিন্তু নিশ্চিত ধরা খাবেন।

সেনা অফিসারদের কি সৈনিকদের সাথে নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হয়?

গুটিকয়েক হেডকোয়ার্টারে কর্মরত অফিসার ছাড়া ইউনিটে কর্মরত সকল সেনা অফিসারদের (লেফটেন্যান্ট কর্নেল পর্যন্ত) সকালে পিটি এবং বিকালে গেমস সহ সব ধরণের প্রশিক্ষনে সেনাসদস্যদের সাথে অংশগ্রহন করা বাধ্যতামূলক। এজন্যই অন্য যে কোন বাহিনীর থেকে সেনাবাহিনীতে সৈনিক ও অফিসারদের মধ্যে কমরেডশীপ বেশি, কারণ তারা এক সাথে কষ্ট করে।

(এখানে খানিকটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও কমরেড শীপের অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বাহিনীর সাথে মুখোমুখি লড়াইয়ে শহিদ লেফটেন্যান্ট মুশফিক যিনি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের একমাত্র বীর উত্তম, তার কথা বলা যায়, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শান্তি বাহিনীর হাত থেকে তার সাথে থাকা সৈনিকদেরকে বাঁচানোর জন্য মরণপন লড়ে গেছেন। আজও অনেক সেনা তার কথা বলতে গিয়ে চোখের জলে বুক ভাসায় )।

শুধু তাই না একজন অফিসারকে এছাড়া প্রতি বছর দুইবার সব অফিসারকেই শারীরিক যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরীক্ষার অনেকগুলো আইটেমের মধ্যে শুধু দুইটি আইটেমের কথা বলি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৩ কিলোমিটার ও ১৬ কিলোমিটার দৌড়। বুঝতেই পারছেন, ফিটনেস না থাকলে আপনার আমার পক্ষে এইগুলো করা সম্ভব না। এছাড়াও প্রতি বছর এদের ওজন নেয়া হয়।

শারীরিক যোগ্যতা আর ওজন নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে পদোন্নতি চিরতরে বন্ধ সহ বিভিন্ন শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নেয়া হয়। কাজেই নিজেদের প্রয়োজনেই সাধারণত কোন অফিসারই ফিটনেসের সাথে কম্প্রোমাইজ করে না।

বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে কি কি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়?

ক। একাডেমিক – প্রত্যেককে বাধ্যতামুলকভাবে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল এর অধীনে। এছাড়াও ট্যাক্টিক্স বা রণ কৌশল সহ অন্যান্য সামরিক বিষয়াবলীর ওপর বিশদ জ্ঞানার্জন করতে হয়। প্রশিক্ষণ দুই বছরের হলেও গ্র্যাজুয়েশন করতে তিন বছর লাগে।

এর ধারাবাহিকতায় কমিশনের পর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট অবস্থায় এই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হয়। এখানে সাইন্স এবং আর্টস এর বিষয় গুলি ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু বিষয় পড়ানো হয়। একজন সাইন্সের স্টুডেন্ট এর বিষয়গুলো সাধারণত এরকম –
বাংলা, ইংরেজী, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথমেটিক্স, (আর্টস এর ছাত্রদের জন্য ইকোনোমিক্স, পলিটিক্যাল সাইন্স ইত্যাদি)।

সামরিক বিষয় যেমন- ম্যাপ রিডিং, ট্যাক্টিকস, মিলিটারি হিস্ট্রি, মিলিটারি সাইন্স, ন্যাশনাল এ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিস, মিলিটারি ল, অ্যাডমিনেস্ট্রেশন অ্যান্ড মোরাল, কমান্ড এন্ড লীডারশীপ ইত্যাদি।

সামরিক বিষয়গুলো সব ক্যাডেটকে বাধ্যতামূলকভাবে অধ্যয়ন করতে হয় :

খ। শারীরিক – শারীরিক প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে শারীরিক উৎকর্ষ এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয় যে দুই বছরের মধ্যে প্রত্যেকের ফিটনেস অসাধারণ হয়ে ওঠে।

গ। অস্ত্র প্রশিক্ষণ – পয়েন্ট টু টু বোর রাইফেল থেকে শুরু করে পিস্তল, রাইফেল, সাব মেশিনগান, লাইট মেশিনগান, রকেট লঞ্চার, গ্রেনেড, বিভিন্ন ধরণের এক্সপ্লোসিভ ইত্যাদি সহ প্রচলিত প্রায় সব ধরণের অস্ত্র চালনায় অত্যন্ত দক্ষ করে তোলা হয় প্রত্যেক সেনা অফিসারকে। সাধারণত প্রত্যেক সেনা অফিসারই একজন দক্ষ বা শার্প শুটার হিসেবে বিবেচিত।

ঘ। চারিত্রিক প্রশিক্ষণ – “A gentleman or gentlewoman should lead a life of HONESTY and INTEGRITY. He or she shall not LIE, CHEAT or STEAL”। এইটা মিলিটারি একাডেমীর HONOUR CODE নামে পরিচিত যা প্রত্যেক ক্যাডেটকে শুধু মানতেই হয় না, আত্মস্থ করতে হয়। চারিত্রিক বিষয়ে বিএমএ তে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। এমন ঘটনাও শুনেছি যারা প্রায় দুই বছর প্রশিক্ষণ নেয়ার পর অফিসার হওয়ার ঠিক আগে আগে ছোটখাট অনেক কারণে একাডেমী থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও প্রত্যেককে কমান্ড এবং লীডারশীপের ওপর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এক একজন দক্ষ কমান্ডার হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এসবের বাইরেও ধর্মীয় বিষয়, নিয়মিত ড্রিল, হর্স রাইডিং, ভেহিক্যাল ড্রাইভিং, র‍্যাপেলিং বা হেলিকপ্টার থেকে র‍্যাপেলিং, প্যারা জাম্পিং, স্কুবা ডাইভিং ইত্যাদি নানা রকম প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ক্যাডেটদেরকে।

কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করতে পাবলিক স্পিকিং এর পর্যাপ্ত অনুশীলন সহ ল্যাংগুয়েজ ল্যাবেরটরিতে সঠিক ভাবে বাংলা ও ইংরেজি উচ্চারণের প্রশিক্ষণ (বি এম এ ছাড়া এরকম ল্যাংগুয়েজ ল্যাবেরটরি সম্ভবত শুধুমাত্র ব্রিটিশ কাউন্সিলেই আছে) দেয়া হয় সব ক্যাডেটকে। এ কারণে প্রায় সব সেনা অফিসারেরই সাধারণত বাংলা ও ইংরেজীতে কমিউনিকেশন স্কিল বেশ ভাল হয়ে থাকে।

তবে সততা বা চরিত্রের উপর সরবাধিক গুরুত্ব থাকে সবসময়। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে যে কারো সততার কোন অভাব আছে বা চারিত্রিক কোন সমস্যা আছে তাহলে তাকে যে কোন পর্যায়েই একাডেমী থেকে বহিস্কার করা হয়। এছাড়াও প্রশিক্ষণের সময় ইনজুরড হয়েও অনেককে বাড়ি চলে যেতে হয়। অনেকে আবার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে স্বেচ্ছায় বিএমএ থেকে চলে যায়। প্রতি ব্যাচে বা কোর্সে গড়ে ১০-১৫ জন এ ধরণের বহিস্কারের শিকার হয়।

ইউ এন মিশনে বাংলাদেশের সেনাদের এত চাহিদা কেন? মিশনে সেনারা কি করে?

ইউএন এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এত চাহিদার কারণের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বিষয়। অনেকেরই একটা ধারণা আছে যে, আমাদের সেনাবাহিনী এমন কি হয়ে গেল যে সারা দুনিয়ায় এত চাহিদা। এই গরীব দেশের আর্মির অস্ত্র সাজসরঞ্জাম কিই বা আছে। দুনিয়ায় এত উন্নত দেশের আর্মি আর সাজ সরঞ্জাম থাকতে কেন বাংলাদেশ ইউএন এ সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা পাঠাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You're currently offline !!

error: Content is protected !!